প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১২:৪১ PM আপডেট: ২৮.০৩.২০২৪ ১২:৪৮ PM
দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে জমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মা। তার মধ্যে এক শিশু সুস্থ ও স্বাভাবিক হলেও অপর শিশুটি জন্ম নিয়েছে এক পা নিয়ে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। শিশুটিকে একনজর দেখতে ক্লিনিকে উৎসুক জনতার ভিড় জমাচ্ছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিরামপুর পৌর শহরের মর্ডাণ ক্লিনিকে তাসলিমা আক্তার (২৫) নামে এক প্রসূতি ওই শিশুটির জন্ম দেন।
জানা যায়, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার শালখরিয়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে মাহাফুজুল ইসলামের সঙ্গে ২০১৪ সালে একই এলাকার তোকছেদ আলীর মেয়ে তাসলিমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের সংসার আলো করে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের আগমন ঘটে।
বর্তমানে ছেলের বয়স ৮ বছর এবং মেয়ের বয়স ৫ বছরের। সম্প্রতি তসলিমা আবারো গর্ভবতী হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গর্ভে জমজ সন্তানের বিষয়টি নিশ্চিত হলে পারিবারিকভাবে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসব বেদনা উঠলে তাসলিমা আক্তারকে নবাবগঞ্জ উপজেলার পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলার মর্ডাণ ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাঁর সিজার কার্য সম্পূর্ণ করেন গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. তাহেরা খাতুন লাভলী। সিজারের মাধ্যমে যমজ শিশুর জন্ম হয়। তবে প্রথমটি মেয়ে সন্তান হলেও দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সময় ঘটে আশ্চার্য ঘটনা। জন্ম হয় এক পা বিশিষ্ট সন্তানের। প্রাথমিকভাবে ঐ শিশু সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণও করতে পারেনি চিকিৎসক। এ ঘটনার পর প্রসূতি মাসহ সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া দুই শিশুই সুস্থ রয়েছে।
ওই শিশুর বাবা মাহিফুজুল ইসলাম বলেন, আমি গরীব মানুষ। ভ্যান ভালাই। যমজ সন্তানের বিষয়টি জানার পর থেকেই আমার স্ত্রী ও আমি চিন্তিত ছিলাম। তাই সিজারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু, দুঃখজনক ও আশ্চার্যের বিষয় হলো এক পা বিশিষ্ট এক বাচ্চার জন্ম হয়েছে। আমি গরীব মানুষ কিভাবে এর চিকিৎসা করব।
এ বিষয়ে গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সিজারিয়ান অপারেশন করা চিকিৎসক ডা. তাহেরা বেগম লাভলী জানান, বর্তমানে মা, এক শিশু সুস্থ ও এক পা ওয়ালা শিশুটি জন্মগতভাবে অসুস্থ। সেই সঙ্গে এক পা বিশিষ্ট বাচ্চাটির মল-মুত্র ত্যাগের জন্য প্রস্রাব ও পায়ুপথ নাই। জেনেটিক্যাল সমস্যার কারণে জন্মগতভাবে শিশুটির এসমস্যা দেখা দিয়েছে। শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হবে। উন্নত চিকিৎসা ও অপারেশনের মাধ্যমে তার প্রস্রাব ও পায়ুপথ বের করা না গেলে তার বেঁচে থাকা সংকটের মধ্যে পড়তে পারে।
খবর পেয়ে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন ঘটনার রাতেই ওই শিশুকে দেখতে মর্ডাণ ক্লিনিকে উপস্থিত হোন। এসময় ইউএনও নুজহাত তাসনীম আওন মা ও যমজ দুই শিশুর খোঁজখবর নেন। সেই সঙ্গে ওই শিশুটির মা তাসলিমা আক্তারকে নগদ অর্থ প্রদান করেন।
আজকালের খবর/এসএইচ